চাঁদপুর প্রতিনিধি ।। চাঁদপুরসহ দেশের ৮ জেলায় জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন আট নারী জেলা প্রশাসক। বর্তমানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে ৮ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদে ১৩৮ জন নারী সারাদেশে কর্মরত রয়েছেন। বর্তমানে ৮টি জেলায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে কর্মরত ৮ জন নারীরা হলেন- চাঁদপুরে অঞ্জনা খান মজলিশ, গোপালগঞ্জে শাহিদা সুলতানা, মাদারীপুরে ড. রহিমা খাতুন, মুন্সিগঞ্জে কাজী নাহিদ রসুল, ঝিনাইদহে মনিরা বেগম, জামালপুরে মুর্শেদা জামান, হবিগঞ্জে ইশরাত জাহান ও বান্দরবানে ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি।
আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী সর্ববৃহৎ দুই রাজনৈতিক দল, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রধান নারী। এর পাশাপাশি সংসদের স্পিকার ও বিরোধীদলীয় নেতা নারী। রাজনীতির মতোই রাষ্ট্র পরিচালনায়ও নারীদের উপস্থিতি বাড়ছে উল্লেখযোগ্যভাবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতেও বিভিন্ন পদে নারীর অংশগ্রহণ দিনদিন বাড়ছে।
একজন জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব ও সুযোগ সুবিধা : জেলা প্রশাসকগণ ‘ডিসি’ হিসেবেই পরিচিত। একটি জেলার প্রধান নির্বাহী তিনি। জেলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তিনি জেলা পর্যায়ের সকল বিভাগের সাথে সমন্বয় করেন। জেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সকল উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মকান্ডের দেখভালের দায়িত্বও তার উপর বর্তায়।
জেলার প্রধান নির্বাহী ও সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের এই কর্মকর্তা একাধারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা রেভিনিউ কালেক্টর এবং বিভাগীয় কমিশনারের ডেপুটি (ডেপুটি কমিশনার) হিসাবেও কাজ করে থাকেন।
একজন দক্ষ জেলা প্রশাসক একটি জেলার প্রশাসনিক কাজ এবং সরকার ও জনগণের মধ্যে সংযোগ সেতু হিসেবে কাজ করেন। জেলার সমস্ত রাজস্ব, কর, জলকর, ভূমিকর সবই তার তত্ত্বাবধানে আদায় করা হয়ে থাকে। তিনি একজন প্রথম শ্রেণীর বিচারক হিসেবে বিচারকার্য পরিচালনা করেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার সভাপতিও তিনি। তাকে জেলার পুলিশ সুপার, এডিসিরা সাহায্য করে থাকেন। তিনি জেলার সকল কর্মকর্তার ও দপ্তরগুলোর মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করেন; তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী, সিভিল সার্জন, কৃষি কর্মকর্তা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, কারা পরিদর্শকের কাজ ও বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি স্কুল কলেজের কর্মকান্ড তদারক করেন ও প্রশাসনিক কাজের তত্ত্বাবধান করেন; জেলার সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর উন্নয়নমূলক কার্যাবলী ও পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেন; তিনি দুর্ভিক্ষ, মহামারী, বন্যাসহ অন্যান্য সকল বিপর্যয়ে সহায়তা প্রদান করেন। তিনি স্হানীয় শাসন ব্যবস্হার কাজ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করেন। পদাধিকার বলে জেলা পরিষদেরও সভাপতি। এছাড়া জেলার সংবাদ ও প্রকাশনা নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, মদ, স্পিরিটের লাইসেন্স, তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদি তার তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে। অপঘাতে মৃত্যুর পর পোস্ট মর্টেম কেউ না করাতে চাইলে ডিসির অনুমতি নিতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী একজন জেলা প্রশাসক জেলার বিভিন্ন দপ্তর সম্পর্কিত ১২০ টি কমিটির সভাপতি।
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো অনুযায়ী, বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ মূল বা ‘বেসিক’ বেতন ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ হাজার ২৫০ টাকা। ২০১৫ সালে এই বেতন কাঠামো অনুমোদন করে বাংলাদেশ সরকার। একজন জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালনকালে সরকারের বেতন স্কেলের সাধারণত ৫ম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। এই গ্রেডে তিনি ৪৩,০০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬৯,৮৫০ টাকা পর্যন্ত মূল বেতন পেয়ে থাকেন। এর সাথে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, ভ্রমণ ভাতা, বিনোদনভাতা, মালি, ধোপা খরচসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
Leave a Reply